রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার বাসিন্দা মোঃ দানিয়ুব খন্দকার ঈদু সহ তার আরো তিন ভাই এর নিকট থেকে মৃত আঃ রহমান জমি ক্রয় করার পরেও দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে দখল পাচ্ছে না অসহায় পরিবার। যদিও ওই ব্যক্তি জমাজমির সরকারি খাজনা খারিজ নিয়ম মতো দিয়ে আসছেন তিনি। কিন্তু জমিটি বর্তমানে এক হিন্দু পরিবারের সদস্যরা জোর পূর্বক দখল করে নিয়ে আছে।
জমি ক্রয় করে দখল না পাওয়া ওই ব্যক্তি উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে নাজমুল হোসেন। অপর দিকে জমি দখলের অভিযোগ ওঠা ব্যাক্তিরা হলেন তাহেরপুর পৌরসভার বাজার পাড়া এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃত শ্রী সুকেশ চন্দ্র দাসের ছেলে, ১- শ্রী সুব্রত দাস (বাবু) ২- শ্রী দেব্রত দাস (ফুটু) ৩- শ্রী বকুল দাস।
অপরদিকে জমির ফায়সালা পেতে মৃত, আব্দুর রহমানের স্ত্রী ও নাজমুল হোসেনের মাতা মোসাম্মৎ নুরুন্নাহার বেওয়া (লিলি) বাদী হয়ে তাহেরপুর পৌরসভা একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায় যে, রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর মৌজার জে এল নম্বর ১৫৩ যার আর এস খতিয়ান নম্বর ৪২৩ ও প্রস্তাবিত খতিয়ান নম্বর ১৬৫ এবং দাগ নম্বর ১৫৯৪ ও ১৫৯৭ আর এস ৪২২ নং খতিয়ান, এর ১৫৯৪ নং দাগের দুই শতক এবং ১৫৯৭ দেড় শতাংশ জমি ক্রয় করেন বাদী মোসাম্মৎ নুরুন্নাহার বেওয়া (লিলি) পক্ষান্তরে বিবাদীগণ তাদের নিজ পিতার জমি বলিয়া দখল করে রাখে। এসব বিষয়ে সূরাহা পেতে তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়রের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। এতেও কাজ না হলে জমি উদ্ধারের জন্য বাদীগণ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে ধর্না দেয়। তাতেও কোনো ফল না পেয়ে একসময় উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। সেই ঘটনা গড়ায় কোর্ট অব্দি। ঘটনার সুষ্ঠু ব্যবস্থা না হলে আবারো ঘুরতে পারে সংঘর্ষ।
এছাড়াও সেখানে ১৫৯৪ নং একটি দাগে একটু জমি কম থাকায় বাধে আরো ঝামেলা। পরক্ষণে বিষয়টি খোলাসা করেন নাজমুল হোসেন। তিনি বলেন কেউ যদি এক শতক কিনেছে সেখানে দখল নিয়ে আছে দেড়শত আবার কেউ দুই শত কিনলেও দখল নিয়ে আছে আড়াই শতক এমনভাবে জমি একটু একটু করে বেশি দখল থাকায় জমির ফায়সালা হচ্ছে না। ওই একটি দাগে উপর কেন্দ্র করে জমির খতিয়ান ভুক্ত মুল মালিকের পক্ষে হতে ২০১৯ সালে ১৪ জনকে আসামি করে দুইটি মামলা হয় উক্ত মামলা ১ নং (১৭৭) মামলা ২ নং (১৯৫ )। আমার আফসোস জমি ক্রয় করে দখল না পেয়েও উল্টো আমার ছোটো ভাই নাসিম হায়দার মামলা পড়েছে । অথচ বিভিন্ন জায়গায় বিষয়টির সুরাহা চাইলে এখনো কেউ ফায়সালা করে দেয়নি।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী নাজমুল হোসেন আরো বলেন, আমরা তাহেরপুর পৌরসভা বাগমারা এসিল্যান্ড অফিস এবং কোট পর্যন্ত গিয়েছি কোথাও এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু ফায়সালা পায়নি। এরমধ্যে একবার আমাদের ওপর হামলাও করা হয়েছে। প্রশাসনের নিকট আমাদের জোর দাবি আমাদের ক্রয় করা সম্পত্তি আমাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হোক। জমির সকল কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। এবং এসব জমির সরকারি খাজনা খারিজের টাকা নিয়মিত পরিশোধ করছি অথচ আমরা কোন ফলাফল পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শ্রী সুব্রত দাস (বাবু) বলেন, আমরা কারো জমি জোর-জবরদখল করে রাখেনি। আমরা আমাদের জমিতেই রয়েছি ।
কিন্তু অভিযোগ কারি নাজমুল বলেন যে সুব্রত দাস প্রস্তাবিত খতিয়ান ১৬৫/১ মূলে ১৫৯৭ দাগে ২.৪২ শতক জমির মালিক হলেও সে জোর পূর্বক ৫ শতক জমি দখল নিয়ে আছে।
উপরে উল্লিখিত ১৯৫ নং মামলার আদেশ অনুসারে গত ১৯ সেপ্টেম্বরে বাগমারা উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনারের দ্বায়িত্বে উক্ত অফিসের কানুনগো ১৫৯৪ নং দাগের জমি ভুক্তভোগী নাজমুলের দখলে না থাকা সত্ত্বেও ১.৯০ শতক জমি দখল দ্বারিত্ব দেখিয়েছে।
বাগমারা উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনার বরাবর এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমানে ভূমি অফিসের দ্বায়িত্বে থাকা বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অঃ দাঃ বাগমারা রাজশাহী মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, উক্ত বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই, বিষয়টি ভূমি অফিসের তাই ভূমি অফিস থেকে যে সিদ্ধান্ত নেয়ার সেটা নেবে।