নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভার কর্মচারীদের অভ্যান্তরিন দ্বন্দের জের ধরে পৌরসভার কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে জটিলতা। সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন পৌরবাসী। বন্ধ রয়েছে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যূ সনদ ও ওয়ারিশন সার্টিফিকেটসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম। গত ১৫ আগষ্ট থেকে এমন কার্যক্রম চলে আসলেও সমাধানের কোন উদ্যোগ নেই। তবে পৌর প্রশাসকের দাবি কর্মচারীদের মধ্যে কোন দ্বন্দ নেই। কিছুটা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন পৌরবাসী।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, সাবেক স্বৈরশাষক শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছন্দপতন ঘটে চারঘাট পৌরসভার কার্যক্রমে। পালিয়ে যায় চারঘাট পৌরসভার তৎকালিন সাবেক মেয়র একরামুল হক। দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে কর্মচারীরা। একটি পক্ষকে সাবেক মেয়রের আস্থা ভাজন ট্যাগ দিয়ে পৌরসভার কার্যক্রম থেকে দুরে রাখা হয়। আরেকটি পক্ষ বৈষম্যের শিকার দাবি করে আধিপত্য বিসÍার লাভ করে। এ নিয়ে জটিলতা শুরু হয় পৌরসভার অভ্যান্তরিন কর্মচারীদের মধ্যে। এভাবে অভিভাবক শুন্য হয়ে পড়ে পৌরসভা। এক পর্যায়ে সরকারী ভাবে নিয়োগ দেয়া হয় প্রশাসক। দায়িত্ব পান চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ দিকে মেয়রের আস্থা ভাজন ট্যাগ দেয়া প্রধান হিসেব রক্ষক কর্মকর্তা আসাদ উদ জামান বাচ্চু পৌরসভায় অনুপস্থিত থাকার কারনে পৌরসভার জরুরী সেবা জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম, মৃত্যূ সনদ, ওয়ারিশন সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সেবা। তবে সঠিক তদারকির অভাবে ঢিলে ঢালাভাবে চলছে ট্যাক্স বিল ও পানির বিলসহ পৌরসভার দৈনন্দিন কার্যক্রম । সেবা নিতে এসে নাজেহাল হয় সেবা গ্রহিতারা। দিনের পর দিন ঘুরেও সেবা পাচ্ছেন না পৌরবাসী। এতে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয় পৌরবাসীর মাঝে।
জন্ম নিবন্ধন নিতে আসা ভুক্তভোগী আবুল বাসারসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, গত ৫ আগষ্ট স্বৈরশাষক শেখ হাসিনার পর থেকে চারঘাট পৌরসভার কার্য্যক্রমে ভাটা পড়েছে। সেবা নিতে এসে পাওয়া যাচ্ছে না সেবা। জন্ম নিবন্ধনসহ জরুরী কাজে পাওয়া যাচ্ছে না কাউকে।
নাম প্রকাশে একাধিক ব্যাক্তি জানান, পরিবর্তিত পরিস্থিতির মুখে চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র একরামুল হক আত্মগোপনে থাকার পর মেয়রের আস্থা ভাজন ট্যাগ দিয়ে মাষ্টার রোলে চাকুরী করা বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে ছাটাই করা হয়। এতে কর্মচারীদের অভ্যান্তরিন দ্বন্দের জেরে দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন কর্মচারীরা। শুরু হয় পৌরসভায় জটিলতা। থমকে দাড়ায় চারঘাট পৌরসভার সেবা।
এ বিষয়ে চারঘাট পৌরসভার প্রধান হিসেব রক্ষক কর্মকর্তা আসাদ উদ জামান বাচ্চু বলেন, আমাকে সাবেক মেয়রের আস্থা ভাজন ট্যাগ দিয়ে কর্মচারীদের একটি অংশ আমাকে পৌরসভার কার্যক্রম থেকে দুরে সরিয়ে দেয়। শুধু দুরে সরিয়ে দিয়েই তারা ক্ষান্ত হোননি। আমার নামে দেয়া হয় মিথ্যা মামলা।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, কর্মচারীদের মধ্যে কোন দ্বন্দ নেই। প্রধান হিসেব রক্ষক কর্মকর্তার নামে মামলা হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে আছেন।
চারঘাট পৌরসভার দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, কর্মচারীদের মধ্যে অভ্যান্তরিন দ্বন্দের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদ সাময়িক ভাবে বন্ধ রয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে এ জটিলতার অবসান ঘটানো হবে বলে দাবি করেন।